হযরত আমীর মু‘আভিয়া (রা.) icon

হযরত আমীর মু‘আভিয়া (রা.)

Arefin Studio
Free
500+ downloads

About হযরত আমীর মু‘আভিয়া (রা.)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।

নাহমাদুহু ওয়া নুসাল্লী ওয়া নুসাল্লিমু ‘আলা রসূলিহিল করীম ওয়া ‘আলা- আ-লিহী ওয়া সাহবিহী আজমা‘ঈন।
হযরত আমীর মু‘আভিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু অতি উচ্চ মর্যাদাশীল সাহাবী। আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল তাঁকে ভালবাসেন। প্রতিটি ব্যক্তি যা বস্তুর আসল অবস্থা ও প্রকৃতি যথাযথভাবে যাচাই বাছাই করে কিংবা যথাযথ পন্থায় সে সম্পর্কে জেনে নিয়ে ওই ব্যক্তি বা বস্তু সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। অন্যথায় ভুল সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া অনিবার্য। সিদ্ধান্ত গ্রহণে ওই ভুলের কারণে মানুষ কখনো সীমালংঘনকারী হয়ে যায়। কারণ, কারো কিংবা কোন জিনিষের কোন বিষয় নিজের বোধগম্য না হলে কিংবা নির্বিচারে অপছন্দনীয় হলেই সে ক্ষোভে ও ক্রোধে ফেটে পড়ে আর এ ক্রোধান্বিত অবস্থায় সিদ্ধান্ত গ্রহণে সে ভুল করে ও সীমালংঘন করে বসে। তাই, ক্রোধান্বিত ও ইতস্তত: অবস্থায় বিচার কার্য সম্পন্ন করাও কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই করে কিংবা প্রকৃত অবস্থা জেনে নিয়ে, উভয় দিকের দলীল-প্রমাণকে সামনে রেখে অতিরঞ্জন ও শৈথিল্য (ইফরাত ও তাফরীত্ব) বর্জন করে, এ উভয়ের মধ্যবর্তীতে দৃঢ়ভাবে অবস্থান করে নিজে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা অথবা জ্ঞানী ও সুস্থ বিবেক সম্পন্নরা সে ক্ষেত্রে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন তা মেনে নেওয়াই অপরিহার্য। আমরা তো মুসলমান। ইহুদীদের সীমালংঘন (ইফরাত্ব) ও খিস্টানদের তাফরীত্ব (শৈথিল্য) অবলম্বন-এর মধ্যবর্তীতে একেবারে সঠিক জায়গায় আমাদের অবস্থান। কারণ, কিতাবুল্লাহ, সুন্নাতে রসূলিল্লাহ্, ইজমা’-ই উম্মত ও ক্বিয়াস-ই শর‘ঈর আমরা নিষ্ঠাবান অনুসারী।
এ নিবন্ধে আমি হযরত আমীর মু‘আভিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু সম্পর্কে আলোচনা করার প্রয়াস পাবো। হযরত আমীর মু‘আভিয়া একাধারে অভিজাত বংশীয় (ক্বোরাঈশী), শীর্ষস্থানীয় সাহাবী, জ্ঞানী, গুণী, ওহী লিখক, ন্যায়পরায়ণ শাসক, মুজতাহিদ ও মুত্তাক্বী ইত্যাদি। এসব বিবেচনায় তিনি একজন অতীব সম্মানিত ব্যক্তিত্ব। ইসলামের দৃষ্টিতে এবং ন্যায়বিচারের নিরীখে এক ব্যক্তি সম্মান এবং প্রশংসা পাওয়া আর সমালোচনার ঊর্দ্ধে থাকার জন্য শুধু যথেষ্ট নয় বরং অপরিহার্যও। তাঁর চরিত্র এবং কর্মও একেবারে নিষ্কলুষ। তিনি ছিলেন একজন নিষ্ঠাবান সাহাবী-ই রসূল।
বাকী রইলো-হযরত আমীর মু‘আভিয়ার উত্তরসূরী ও স্থলাভিষিক্ত পুত্র ইয়াযীদ প্রসঙ্গ। তার চরিত্র, ধর্ম-বিশ্বাস (আক্বিদা), কর্মকান্ড ও ইসলামের নিদর্শনাবলীর প্রতি অবজ্ঞা ইত্যাদি বিবেচনায় সে ছিলো মহাপাপী, ধিক্কৃত ও ঘৃণিত ব্যক্তি; অনেকের মতে অভিশপ্ত। এখন প্রশ্ন হলো তার কারণে তাঁর পিতা হযরত আমীর মু‘আভিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর সমালোচনা এবং তাঁর শানে শালীনতা বিবর্জিত মন্তব্য ও আলোচনা বৈধ হবে কিনা? সংক্ষিপ্ত ভাষায় এর জবাব হলো- ‘না’। ইয়াযীদের কারণে হযরত আমীর মু‘আভিয়ার প্রতি কোনরূপ অসম্মান প্রদর্শন বৈধ ও সমীচিন হবে না। কারণ, তিনি যদি সমালোচিত কিংবা গ্রহণযোগ্যতায় কোনরূপ ত্রুটিপূর্ণ হন, তাহলে একদিকে ইসলামের অনেক মৌলিক বিষয় প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যাবে, অন্যদিকে ওই অসম্মান প্রদর্শনকারী হবে উগ্রতা, বিবেকহীনতা এবং ন্যায়পরায়ণতা-শূন্যতা ইত্যাদি দোষে দুষ্ট এবং গুনাহ্গার। সুতরাং হযরত আমীর মু‘আভিয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। নিজে সিদ্ধান্তে নেওয়ার আগে মহান সাহাবীগণ সম্পর্কে পবিত্র ক্বোরআনের বাণী কি রয়েছে, খোদ্ রসূল-ই আক্‌রাম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম হযরত আমীর মু‘আভিয়াকে ভালবাসতেন কিনা, অন্যান্য সাহাবা- ই কেরাম তাঁকে কিভাবে মূল্যায়ন করতেন, আমাদের বুযুর্গানে দ্বীন, ওলামা-মাশাইখ এবং শরীয়তের নির্ভরযোগ্য ও বরেণ্য ব্যক্তিবর্গের সিদ্ধান্ত কি? এ ক্ষেত্রে এসব বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়াই হবে নিরাপদ। অন্যথায় মহাবিপদ-তথা অতি অশুভ পরিণতির সম্মুখীন হওয়া অনিবার্য।
সুতরাং আসুন আমরা প্রথমে হযরত আমীর মু‘আভিয়া সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানি, তারপর তাঁর বিপক্ষে তথাকথিত অভিযোগগুলোর চুলচেরা বিচার-বিশ্লেষণ নির্ভরযোগ্য কিতাবাদির আলোকে করি। সুখের বিষয় যে, এ পুস্তকে এসব বিষয়ে বিস্তারিত ও সপ্রমাণ আলোচনা করা হয়েছে এবং ইসলামের চতুর্দলীলের আলোকে এ প্রসঙ্গে জরুরী পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। তাই, আশা করি পুস্তকটা পড়ে পাঠকসমাজ অত্যন্ত উপকৃত হবেন। আল্লাহ্ আমাদের এ প্রয়াসকে ক্ববূল করুন! আ-মী-ন।

- (মাওলানা) মুহাম্মদ আবদুল মান্নান
Show More

হযরত আমীর মু‘আভিয়া (রা.) Screenshots